তোমার স্মরণে
বিশ্বনাথ মাহাত
ব্যর্থতার চরম পর্বে হৃদয়ের শেষ আশা - " তোমাকে আবার নতুন করে নতুন ভাবে ফিরে পাওয়া। "
কিন্তু কল্পনা আর বাস্তবের মধ্যে আকাশ-জমিন প্রভেদ। মানুষ যা কিছু ভাবে, যা কিছু স্বপ্ন দেখে, তা হইতো কিছু ক্ষেত্রে সফল হয়, কিন্তু অনেককেই মেনে নিতে হয় বিধাতার দেওয়া ব্যর্থতার চরম গ্লানি। আমিও স্বপ্ন দেখেছি, নিজেকে সুন্দর ভাবে গড়ে তোলার, আর তোমাকে নিয়ে হৃদয়ের এককোনে ভালোবাসার সৌধ গড়ার। মনের ভাবাবেগে তুমি হইতো চিরদিনের স্বপ্নপ্রেয়সী, যে বারবার নতুন স্বপ্নের ডালিভরা পুষ্পরাজী আমায় উপহার দিয়ে যায়। ‘ কিন্তু অবশেষে ঘুম ভাঙল ’ তখনই, যখন বাস্তব বারবার মনের দরজায় কড়া নেড়ে বলে ---
“অবিশ্বাসের ঢেউ আসবে
যেদিন ধেয়ে,
বুঝবে তুমি ভালোবাসা কী ?
মরীচিকা শুধু,
হৃদয়ের আঘাত খেয়ে। ”
হ্যাঁ । সেদিনই বুঝলাম যেদিন সহস্র স্বপ্ন মুহূর্তের মধ্যে তুমি ভেঙে চুরমার করে দিলে। তুমি হইতো বুঝবে না, তবু বলছি – সেদিন আমার পায়ের তলার মাটিটা ভীষণ আলগা মনে হয়েছিল। বেঁচে থাকার শেষ আশাটুকুও সেদিন হারিয়ে ফেলেছিলাম। জীবনের অস্থিত্বটাকে সেদিন টিকিয়ে রাখা আমার পক্ষে অসম্ভব মনে হয়েছিল। কিন্তু অনেক কষ্টে মনের দুঃখকে, যন্ত্রণাকে বুকে পাথর চাপা দিয়ে কোন রকমে দমিয়ে রেখেছিলাম। আর তাই আজও বেঁচে আছি। স্বপ্ন ভাঙার পর – স্বপ্ন গড়ার বাসনা মন হারিয়েছে। কিন্ত, সে স্বপ্ন দেখতে ভুলি নি, আজও মন স্বপ্ন দেখে তোমাকে নিয়ে। কিন্তু লাভ কী বল –
“ তুমিই যদি ভুল বোঝ,
মনকে কী করে বোঝায় বল।
তোমায় নিয়ে কত আশা,
তোমায় কী করে জানায় বল।।”
আজ বললে হইতো তুমি বলবে উপহাস করছি। কিন্তু সত্যি কী জান ; মন আজও তোমায় ভালোবাসে। তাই তোমার দেওয়া চিঠিটা আজও আমার মনকে গভীর ভাবে আঘাত করল।
তোমাকে দোষ দেব না। বলব শুধু ভগবানকে –
“ কেন রে বিধাতা পাষাণ হেন।”
আমার উপর আরোপ করা তোমার প্রতিটি অভিযোগ কাঁটার মতো আমার গায়ে বিঁধেছে। তবুও মন যন্ত্রণায় একবারও উঃ পর্যন্ত করেনি। কারন জান – তোমার দেওয়া সব কিছুই আমার কাছে সুন্দর – তা যদি দুঃখই হয় বা আনন্দই।
“ ভালোবাসা বিশ্বাসের দাস ” – এর প্রমান স্বরূপ তোমায় কোন লিখিত দলিল হইতো দিতে পারবো না, তবু যদি আমায় সত্যিকারের মুহূর্তের জন্যও ভালোবেসে থাকো তাহলে বলতে পারি – তোমার অভিযোগ ভিত্তিহীন, অযোক্তিক। কারণ, তোমাকে ভালোবাসি ; হইতো নিজের চেয়েও বেশী। তাই, তোমাকে বদনাম করে নিজেকে কখনোই সুখী করতে পারবো না। বরং দুঃখটাই বেশী পাবো। তোমাকে অপমান করা মানে, নিজেকে, নিজের ভালোবাসাকে অমর্যাদা করা। আর নিজের ভালোবাসাকে আমি কখনোই অমর্যাদা করতে পারবো না।
বলবার অনেক কিছু আছে, লেখারও অনেক কিছু আছে ; কিন্ত সময় সীমিত। তাই মনের ভাবনাকে সীমিত করে শেষে বলি, --
ভালোবাসি তোমায়,
বাসবো ভালো চিরতরে ;
আজও পথচেয়ে আছি,
পারো যদি, নিয়ো একটু আপন করে।







Osadharan
ReplyDelete